অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী ছাত্রদের জন্য সুখবর। পশ্চিমবঙ্গ সরকার মেধাবী ছাত্রদের অর্থনৈতিক সহায়তা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ ফ্রীশিপ স্কিম (WBFS-West Bengal Freeship Scheme) চালু করেছে। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ-শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে চালু করা হয়েছে এই স্কিম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি, ফার্মেসি, আর্কিটেকচার ইত্যাদিতে স্নাতক স্তরে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের আর্থিক সাহায্য করবে সরকার। আপনি কি এই স্কিমে সহায়তা পাওয়ার যোগ্য ? কিভাবে পাবেন এই স্কিমের সুবিধা ? কোথায় করবেন আবেদন ? জানতে পারবেন এই প্রতিবেদনে।
Table of Content:
West Bengal Freeship Scheme -এর উদ্যেশ্য :
অনেক দুস্থ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী আছেন যাদের জন্যে উচ্চ-শিক্ষার ব্যয় বহন করা মুশকিল হয়ে ওঠে। অনেক ক্ষেত্রে অর্থের অভাবে উচ্চ-শিক্ষা সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না , অনেকে মাঝ পথেই ড্রপ-আউট হয়ে যান।
- তাই সেই কারণে এই WBFS স্কিমের প্রধান উদ্যেশ্য হল অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য টিউশন ফি কমানো।
- এর ফলে দুস্থ, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে এবং প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সমান সুযোগ লাভ করবে।
পশ্চিমবঙ্গ ফ্রিশিপ স্কিম (WBFS) স্কিমের সুবিধা কি কি ??
এই WBFS স্কিমের অধীনে যোগ্য ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চ-শিক্ষার জন্যে টিউশন ফি তে ছাড় পেয়ে থাকেন ।
- পূর্ণ ফ্রীশিপ : এই ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থীদের টিউশন ফী সম্পূর্ণভাবে মাফ করে দেওয়া হয় ।
- আংশিক ফ্রীশিপ : এই ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থীদের টিউশন ফী -এর ৫০ শতাংশ আংশিক ভাবে মাফ করে দেওয়া হয় ।
পশ্চিমবঙ্গ ফ্রিশিপ স্কিম স্কিমের জন্যে কি কি যোগ্যতার প্রয়োজন ?
এই ফ্রীশিপ স্কিমের সুবিধা নেওয়ার জন্যে, টিউশন ফি মাফ করার জন্যে , এই স্কিমে আবেদন করার জন্যে নিম্নলিখিত যোগ্যতার প্রয়োজন :
- রাজ্যের বাসিন্দা : আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে।
- শিক্ষাগত মেধা : আবেদনকারীকে রাজ্য কিংবা জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষার মেধা তালিকায় স্থান পেয়ে থাকতে হবে।
- পারিবারিক বার্ষিক আয় : যোগ্য আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় ২৫০০০০ টাকার কম হতে হবে।
WBFS স্কিমের জন্যে কিভাবে আবেদন করবেন ?
যোগ্য ইচ্ছুক প্রার্থীদের এই স্কিমে অনলাইন আবেদন করতে হবে । আবেদনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি অনলাইনেই পরিচালিত হয় :
- রেজিস্ট্রেশন : সবার প্রথমে আবেদনকারীকে West Bengal Freeship Scheme এর অফিসিয়াল পোর্টালে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই সময় প্রার্থীকে ব্যক্তিগত এবং একাডেমিক তথ্য দিয়ে নিজেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই সময় একটি Applicant ID তৈরি হয়ে যাবে, এরপর আবেদনকারিকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
- রেজিস্ট্রেশনের পর প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে , প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করতে হবে । তারপর আবেদন ফাইনাল সাবমিট করতে হবে।
- ফাইনাল সাবমিট করার আগে তথ্য পুনঃ যাচাই করে নেবেন । কারণ অন্তিম সাবমিটের পর তথ্যের কোনরকম পরিবর্তন সম্ভব নয়।
এই স্কিমে আবেদন করার জন্যে কি কি নথির প্রয়োজন ??
এই স্কিমে আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত নথিগুলির প্রয়োজন। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করার আগে প্রয়োজনীয় নথিগুলি অবশ্যই কাছে রাখবেন।
- আবেদনকারীর সাম্প্রতিক পাসপোর্ট মাপের স্ক্যান করা ফটোগ্রাফ।
- আবেদনকারীর স্ক্যান করা স্বাক্ষর ।
- আবেদনকারীর ১০+২-এর স্ক্যান করা মার্কশীট।
- রাজ্য বা জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষার মেরিট কার্ড।
- পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণ পত্র- ডোমিসাইল সার্টিফিকেট।
- বার্ষিক পারিবারিক আয়ের প্রমাণপত্র – ইনকাম সার্টিফিকেট।
কারা বাদ পড়বেন ? কারা কারা এই স্কিমের সুবিধা নিতে পারবেন না ??
যেসব ছাত্রছাত্রী ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট-কাম-মিন্স স্কলারশিপ স্কিম (SVMCM) বা AICTE-এর টিউশন ফি ওয়েভার (TFW) স্কিমের সুবিধা পেয়েছেন, তারা WBFS-এর সুবিধা পাওয়ার জন্যে আবেদন করতে পারবে না।
আরও বিস্তারিত জানার জন্যে WBFS -এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন : https://wbhed.gov.in/wbfs/
আরও পড়ুন :
আপনার মনে সর্বাধিক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি (FAQs):
-
পশ্চিমবঙ্গ ফ্রিশিপ স্কিম (WBFS)-টি কি ?
পশ্চিমবঙ্গ ফ্রিশিপ স্কিম (WBFS) টি পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা পরিচালিত একটি উদ্যোগ , যাহার মাধ্যমে দুস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে।
-
কোন দপ্তর এই স্কিমটি চালু করেছে ?
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ-শিক্ষা দপ্তর এই পশ্চিমবঙ্গ ফ্রিশিপ স্কিম (WBFS) স্কিমটি চালু করেছে।
-
এই স্কিমটি কাদের জন্যে ?
এই স্কিমটি কেবলমাত্র সেইসকল ছাত্রছাত্রীদের জন্যে যারা বেসরকারি প্রতিষ্টানে ইঞ্জিনিয়ারিং , টেকনলজি , ফার্মাসি , আর্কিটৈক্চর -বিভাগে স্নাতক স্তরে পাঠরত।
-
এই WBFS স্কিমে আবেদন করার জন্যে কি যোগ্যতার প্রয়োজন ?
১। আবেদনকারীকে অবশ্যই রাজ্যের বাসিন্দা হতে হবে ।
২। আবেদনকারীকে রাজ্য অথবা জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোর কার্ড থাকতে হবে।
৩। আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয় অবশ্যই ২৫০০০০ টাকার মধ্যে হতে হবে। -
কারা কারা এই স্কিমের সুবিধা নিতে পারবেন না ?
যেসকল ছাত্রছাত্রীরা পশ্চিমবঙ্গ স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট-কাম-মিনস স্কলারশিপ স্কিম (SVMCM) অথবা অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (AICTE) এর টিউশন ফি ওয়েভার (TFW) স্কিমের সুবিধাভোগী, তারা এই স্কিমের সুবিধা নিতে পারবেন না।
-
এই স্কিমে আবেদন করার জন্যে কি কি নথির প্রয়োজন ??
১. স্ক্যান করা সাম্প্রতিক ফটোগ্রাফ ।
২. প্রার্থীর স্ক্যান করা স্বাক্ষর ।
৩. ১০+২ -এর স্ক্যান মার্কশীট।
৪. এনট্রান্স পরীক্ষার মেরিট কার্ড ।
৫. ডোমিসাইল সার্টিফিকেট ।
৬. পারিবারিক বার্ষিক আয়ের সার্টিফিকেট ।